অসুখ হইলে আমার ইচ্ছা করে, দরজা জানালা বন্ধ কইরা ঘরটারে আন্ধার বানাইয়া কাথা গায়ে দিয়া শুইয়া থাকি। শুইয়া শুইয়া জ্বরের সাথে মোলাকাত করতে করতে ঘোরের মধ্যে আমি মায়ের কোলটারে খুঁজতে থাকি। চিৎ হইয়া শুইয়া শুইয়া মনে করতে থাকি-, জ্বর হইলে যখন আমার মায় মাথায় পানি ঢালতো; তখন একফোটা পানি হুট কইরা চোখের মধ্যে ডুইকা পরার অনুভূতিটা। ঘোরের মধ্যে আমি টের পাই আমার শরীরের লোমগুলো পরাজিত সৈনিকের মতো কাবু হয়ে দাঁড়িয়ে আছে। আর আমি কাথাটারে আরো একটু আপন কইরা নিয়া গুটিশুটি হইয়া শুইয়া থাকি।
অসুখ হইলে আমার কবিতা লিখতে ইচ্ছে করে।
আমি ছুঁইটা যাই আমার কলমের কাছে,
কলম আমারে প্রত্যাখ্যান করে।
অসুখ হইলে আমার ছুঁইটা যাইতে ইচ্ছা করে,
ঘাসফুলে শিশির জইমা থাকা পুরানা রাস্তায়;
এইসব নাগরিক জীবন আমারে গলা পেঁচাইয়া ধরে।
অসুখ হইলে আমার ইচ্ছা করে,
ইচ্ছা করে আমি পাখি হইয়া যাই;
ছোটবেলায় নিজে হাতে মাইরা ফালানো
টুনটুনির বাচ্চার অভিশাপে আমার আর পাখি হওয়া হইলো না।
অসুখ হইলে আমার অনেক অনেক অনেক কিছু ইচ্ছা করে। এইসব এইসব ইচ্ছাগুলো যখন আমারে ঘাড় ধাক্কা দিয়া দূরে সরাইয়া দেয়। তখন আমি ধরতে চাইলাম একজোড়া শীতল হাত। যেই হাতের শীতলতায় আমার জ্বরের শরীরের সব উষ্ণতা মেঘ হইয়া উইড়া যাইবো। অথচ, অথচ সেই হাত দুইখানও আমার কখনো ধরা হইলো না।
No comments:
Post a Comment