Sunday, April 10, 2022

মৃত্যু যতদূর- ততদূর উদাসীনতা

 ধরেন আপনি জেনে গেছেন আপনার জীবনে কতটুকু সময় বাকি আছে। ধরে নেন সেই সময় মাত্র এক ঘন্টা। ঠিক এক ঘন্টা পরে আপনার মৃত্যু। তাহলে আপনি কি করতেন? পরিবার এবং প্রিয় মানুষকে সময় দিতেন? কিংবা একদিন বা ২৪ ঘন্টা সময় আছে। তাহলে কি করতেন? আগের করণীয়তার সাথে তওবা করতেন? নিজের পাপ কাজের জন্য কান্নাকাটি করতেন? যদি এক সপ্তাহ থাকতো? তাহলে তার সাথে আর কি কি করতেন? যাদের কাছে নিজেকে দোষী মনে হয়  তাদের কাছে ক্ষমা চাইতেন? কিংবা আর্থিক ঋণমুক্ত হওয়ার চেষ্টা করতেন? যদি এক মাস সময় পেতেন? আপন মানুষদের একটু বেশি খুশি রাখার চেষ্টা করতেন? 

এমন যদি হতো আপনাকে সেই নির্দিষ্ট সময় বলে দেওয়া হলো, এবং সেই সময় পঞ্চাশ বছর। তাহলে? তাহলে কিচ্ছু করতেন না। প্রথম উনপঞ্চাশ বছর একদম বেখেয়ালী জীবনযাপন করতেন। শেষের এক বছরে সেই এক্টিভিটিজ। আসলে আমরা সময়সীমা জেনে গেলেই সাবধান হই। শুধুমাত্র তখনই নিজেকে গুছিয়ে নিতে ব্যস্ত হয়ে পরি। কিন্তু জীবন তো আমাদের সময়সীমা জানায় না। জীবন চলে লিনিয়ার গতিতে। যখনই তার শেষ সীমানা খুঁজে পায়, তখনই শেষ হয়ে যায়। মূলত জীবন নিজেও জানে না তার সীমানা কতদূর।

আমরা ধরেই নিই যে, আমরা নাতি নাতনীর যৌবন দেখে মারা যাবো। সেই হিসেব করেই তো সুদূর প্রসারী চিন্তা করি, পরিকল্পনা করি, বাস্তবায়ন করি। জীবন হইলো বেলুনের মতো। যেকোনো সময় ঠাস কইরা ফুইটা যাইতে পারে, যাইতেই পারে। কিংবা জীবন একটি সুন্দর ফুলের মতো, কলি থেকে ফুলের সর্বোচ্চ সৌন্দর্য ভেদ করে একসময় শুকিয়ে ঝরে পরবে, ঝরে পরবেই। এইযে জীবন শেষ হয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা, এইটা কিন্তু নিশ্চিত। গণিতের ভাষায় সম্ভাবনা এক বা সম্পূর্ণ। এইটা আমরা সবাই জানি, বিশ্বাস করি। কিন্তু অনুভব করি না। অনুভব করতে না পারাতে কি হচ্ছে? বিশ্বাসটা শুধু বাহ্যিক রূপে দাঁড়িয়ে আছে, ভাষ্কর্যের মতো। ভাষ্কর্যে শরীর থাকে, প্রাণ থাকে না।

No comments:

Post a Comment

অন্ধের অন্ধকার

বিষাদ দিনযাপনের ইতিহাস থাকুক শহর জুড়ে। ঘর থেকে বের হলেই যেন দেখতে পাই, নষ্ট হওয়া খাবারের গন্ধে কতটা উন্মাদ দাঁড় কাক। ঘৃণাভরা কোলাহল ভাঙলেই য...